1. info@www.sristytv.com : NEWS TV : NEWS TV
  2. info@www.sristytv.com : Sristy TV :
বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০৭:০৯ অপরাহ্ন

সচেতনতার কারণে সমাজে অটিস্টিকদের গ্রহণযোগ্যতা এসেছে: জেলা প্রশাসক

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৬৫ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক জনাব আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেছেন, বর্তমান সরকার অটিজম বান্ধব। অটিজম নিয়ে সরকারের পাশাপাশি যে সকল ব্যক্তি বিশেষ ও বেসরকারী এনজিওগুলোর ইতিবাচক কর্মকান্ডের ফলে আমরা একটি অবস্থানে এসে পৌঁছেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নিরলস প্রচেষ্টায় জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে অটিজম বিষয়ে সর্বত্র সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সমাজে স্বাভাবিক মানুষের মতো অটিস্টিকদের কিছুটা হলেও গ্রহণযোগ্যতা এসেছে। এ জেলায় বর্তমানে পুরুষ, মহিলা ও হিজড়াসহ এনডিডি সম্পন্ন ব্যক্তির সংখ্যা ১৭ হাজার ২৭৬ জন। তন্মধ্যে অটিজম ডিসঅর্ডার ৫ হাজার ২১৯ জন, ইন্টেলেকচুয়াল ডিসঅ্যাবিলিটি (বুদ্ধি প্রতিবন্ধি) ৭ হাজার ৩৩৪ জন, সেরিব্রাল পালসি ৪ হাজার ৩০৩ জন, ডাউন সিনড্রোম ৪২০ জন। এদের জন্য সরকারী প্রতিষ্ঠানের বাইরে বেসরকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে মাত্র ১১টি। ১১টি প্রতিষ্ঠানের ক্যাপাসিটি ১১’শ। আমাদের আরও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান দরকার। যেগুলো আছে সেগুলোর সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করতে হবে এবং সেগুলোতে শিক্ষক, সাইকোলজিস্ট, সাইকিয়াট্রিস্ট ও ফিজিওথেরাপিস্টসহ ডাক্তার-নার্স-কর্মচারীদের সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে। আজ ২ এপ্রিল সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে জেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা কার্যালয় আয়োজিত ১৭-তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়-‘সচেতনতা-স্বীকৃতি-মূল্যায়নঃ শুধু বেঁচে থাকা থেকে সমৃদ্ধির পথে যাত্রা’। আলোচনা সভার পূর্বে সার্কিট হাউজের সামনে বেলুন উড়িয়ে দিবসটির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসকর আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান এবং চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনের সিবিটি প্র্যাকটিশনার ও সাইকোলজিস্ট মিস তানজিয়া রহমান।
জেলা প্রশাসক বলেন, আগামী ২০৪১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে একটি রূপকল্প দিয়েছেন। এতে বাংলাদেশের মাথাপিছু গড় আয় হবে ১২ হাজার ৫’শ মার্কিন ডলার। আমাদের এ মুহুর্তে মাথাপিছু গড় আয় ২ হাজার ৭৬৫ মার্কিন ডলার। এটাকে চারগুনে উন্নীত করতে হবে। মানসিক ও এনডিডি সম্পন্ন ব্যক্তিসহ কাউকে পেছনে ফেলে নয়, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রথমে প্রত্যেক ব্যক্তিকে সমাজ বিনির্মাণে এগিয়ে আসতে হবে। সমাজের মূল কাঠামো অর্থনৈতিক চাহিদা শক্তির মূল স্রোতে সবাইকে শামিল হতে হবে।
তিনি বলেন, ১১টি প্রতিষ্ঠানের বাইরে আগ্রাবাদ মা-শিশু হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল অটিজম নিয়ে কাজ করছে। সকলের সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করলে অটিজমদের সেবার মান আরও বৃদ্ধি পাবে। আমরা কিছু দিনের মধ্যে হার্ট ও লিভারের সুরক্ষায় স্কুল ক্যাম্পেইন করতে যাচ্ছি, কলেজিয়েট স্কুল থেকে শুরু করতে চাই। পর্যায়ক্রমে স্কুল ও কলেজগুলোতে এ কার্যক্রম চালু করতে চাই। একই সাথে একই দিনে আমরা অটিজম ও এনডিডি নিয়েও একটি ক্যাম্পেইন করতে পারি। হার্ট, লিভার সুরক্ষায় রুটিন বা ক্যালেন্ডার করে মাত্র ১০ মিনিটের জন্য ক্যাম্পেইন করে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে পারলে তারা তাদের পরিবাররের সদস্যদের জানাবে। শুধু মহানগর নয়, উপজেলা পর্যায়েও এ ক্যাম্পেইন পৌঁছে দিতে চাই। উপজেলা পর্যায়ে একটি করে এনডিডি সেন্টার ও বিভাগীয় পর্যায়ে এনডিডি সেন্টার করার পরিকল্পনা রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মহোদয় আরও বলেন, সমাজসেবা কার্যালয়ের সামনে প্লে গ্রাউন্ড গড়ে তোলা গেলে মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধীরা সপ্তাহে ২/৩ দিন অনুশীলন করতে পারবে। এ জন্য কোন সহযোগিতা প্রয়োজন হলে তা করব। ১২ বছরের উপরে অটিস্টিক বৈশিষ্ঠ্য সম্পন্ন ব্যক্তি যদি টেবিল মোছা, ধোয়া ও প্যাকেটিং করার কাজ করতে পারে তাহলে অন্ততঃ ৪/৫ জনকে চাকুরী দিতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। নগরীর রৌফাবাদের ছোটমনি নিবাস ও মানসিক প্রতিবন্ধীদের জন্য খাবারের বরাদ্ধ ১০০ টাকা। এটা আরও বৃদ্ধি করার জন্য মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে অবহিত করা হবে।
আলোচনা সভায় মূখ্য আলোচক চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনের সিবিটি প্র্যাকটিশনার ও সাইকোলজিস্ট সহধর্মিনী জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম মিস. তানজিয়া রহমান বলেন, এক সময় অটিজম ছিল একটি অবহেলিত জনস্বাস্থ্য ইস্যু। এ সম্পর্কে সমাজে নেতিবাচক ধারণা ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল অটিজম নিয়ে যেভাবে কাজ করছেন এটা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবীদার। তাঁর জন্যই আজকে আমরা এতটুকু সচেতন। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে অটিস্টিকদেরও কল্যাণে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিবন্ধীরা সবসময় অসহায়, তাদের পাশে সমাজের বিত্তবানদের দাঁড়াতে হবে, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। মানসিক ও অটিজম রোগীদের প্রতি সহনশীল আচরণ করতে হবে। তাদের শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি দায়িত্বশীল হতে হবে। চিকিৎসার পাশাপাশি মানসিক ও অটিস্টিক রোগীকে পারিবারিক ও সামাজিক সমর্থন দিতে হবে।
জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, সমাজসেবাধীন রৌফাবাদের ছোটমনি নিবাস ও মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় রৌফাবাদ আরবান ডিসপেনসারী থেকে মাঝে মাঝে একজন চিকিৎসক ও একজন নার্স পাঠানো হবে।
বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের পরিচালক কাজী নাজিমুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও শহর সমাজসেবা অফিসার মোহাম্মদ আলমগীরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসের আলোচনা সভায় মূখ্য আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনের সিবিটি প্র্যাকটিশনার ও সাইকোলজিস্ট, লেডিস ওয়েলফেয়ার ক্লাবের সভাপতি তানজিয়া রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ ফরিদুর আলম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মেরিন সিটি মেডিকেল কলেজের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের অধ্যাপক ও নিষ্পাস অটিজম ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ডা. বাসনা মুহুরী, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও অটিজম সংস্থা-স্পেকট্রা স্কুল অব অটিজমের চেয়ারপারসন ডা. ফাহমিদা ইসলাম চৌধুরী ও অটিজম সংস্থা-ফেয়ার’র যুগ্ম সম্পাদক প্রফেসর মোঃ আবুল হোসেন। সমাজসেবা অদিপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, অটিজম সংস্থা-প্রয়াস, আশার আলো, ফাউন্ডেশন ফর অটিজম রিসার্চ এন্ড এডুকেশন (ফেয়ার), নিষ্পাপ অটিজম ফাউন্ডেশন, প্রেরণা অটিজম সেন্টার, অটিস্টিক চিলড্রেন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, সেহের অটিজম, দ্বিপালয় অটিজম চিলড্রেন একাডেমি, চিটাগাং অটিস্টিক সোসাইটি, সুইড বাংলাদেশ ও প্রশান্তি অটিজম স্কুলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
© 2024 - sristy tv. All Rights Reserved.